ওয়ার্ড প্রসেসর কি? ওয়ার্ড প্রসেসর এর বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা সমূহ

ওয়ার্ড প্রসেসর কি এবং ওয়ার্ড প্রসেসরের সুবিধা কতটি

ওয়ার্ড প্রসেসরের কাজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। আমরা প্রায় প্রত্যেকেই নিত্যদিনের কাজে Word processor ব্যবহার করি। কিন্তু এটি ব্যবহার করা সত্ত্বেও আমাদের অধিকাংশ লোক জানিই না যে ওয়ার্ড প্রসেসর কি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ওয়ার্ড প্রসেসর এর গুরুত্ব কতটুকু।

অনেকেই হয়ত Word processor নামটি শোনা মাত্রই CPU বা কম্পিউটারের Central Processor Unit কে ধারণা করছেন। তবে ধারণার বিষয়টি পুরোই ভুল।

সঠিক তথ্যটি জানার জন্যে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোন ব্যবহারকারী হন তবে আপনাকে ওয়ার্ড প্রসেসর এর প্রয়োজনীয়তা, বৈশিষ্ট্য এবং সুযোগ -সুবিধার কথা জানতে হবে।

আজ আমি Word processor এর যাবতীয় বিষয়বস্তু আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। চলুন জেনে নিই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ওয়ার্ড প্রসেসরের গুরুত্ব এবং এর আদ্যোপান্ত।

ওয়ার্ড প্রসেসর কি?

ওয়ার্ড প্রসেসর (Word processor) এক ধরণের অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। এটা মূলত লেখালেখির কাজে ব্যবহৃত হয়। যেমন, ডকুমেন্ট প্রস্তুত করা, সম্পাদনা করা, ডকুমেন্টের গঠন নির্ধারণ করা, ডকুমেন্ট সংরক্ষণ এবং মুদ্রণে করার কাজে ইত্যাদি।

বিশ্বের সর্বপ্রথম ওয়ার্ড প্রসেসর এর নাম ওয়ার্ডস্টার (Word Star), যা ৯৭৯ সালে মুক্তি পায়।

৯৮০ এর দশকে Word processor সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহৃত হয় এবং এর চাহিদা ও জয়গান চতুরদিকে ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

যদিও শুরুর দিকের Word processor software খুব বেশী ফিচার সমৃদ্ধ ছিল না। কিন্তু আধুনিক ওয়ার্ড প্রসেসরগুলি অনেক বেশী ফিচার সমৃদ্ধ এবং অত্যন্ত ইউজার ফ্রেন্ডলিও বটে, যা একজন অফিস কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য দক্ষতা লাভে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

একটি সময় ছিল যখন Word processor কম্পিউটার ব্যতীত অন্য কোথাও ব্যবহার করা সম্ভব ছিল না। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে এখন বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল ডিভাইসে ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করা যায়।

তারমধ্যে যেমন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ট্যাব ইত্যাদি।

কয়েকটি ওয়ার্ড প্রসেসরের নাম

৯৮০ দশকের পর থেকে বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন ধরণের ওয়ার্ড প্রসেসর সফটওয়্যার তৈরি করেছে। তার মধ্য হতে বহুল ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় কিছু Word processor এর নাম নিচে তুলে ধরা হলো।

  • Microsoft Word -মাইক্রোসফট ওয়ার্ড,
  • WordPad – ওয়ার্ডপ্যাড,
  • Google Doc -গুগল ডক,
  • WPS Office – WPS অফিস,
  • Lotus word pro -লোটাস ওয়ার্ড প্রো,
  • Notepad -নোটপ্যাড,
  • WordPerfect -ওয়ার্ড পারফেক্ট (Windows only),
  • AppleWorks -আপেল ওয়ার্ক (Mac only),
  • Work pages – ওয়ার্ক পেজ,
  • OpenOffice Writer -ওপেন অফিস রাইটার।

এগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরণের ওয়ার্ড প্রসেসর সফটওয়্যার রয়েছে।

ওয়ার্ড প্রসেসর কি ধরনের সফটওয়্যার?

ওয়ার্ড প্রসেসর মূলত এক ধরণের অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে বিভিন্ন Text ডকুমেন্ট তৈরি, সম্পাদনা, সংরক্ষণ এবং মুদ্রাণের কাজ করা হয়।

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় Word processor software হলো Microsoft Word.

ওয়ার্ড প্রসেসরের সুবিধা কতটি?

অনেকেই জানতে চান ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করে কি কি করা যায় এবং এর সুবিধা কয়টি?

ওয়ার্ড প্রসেসরে কাজ করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন ধরণের সুবিধা পেয়ে থাকি। তার মধ্য হতে কিছু সুবিধার কথা নিচে তুলে ধরা হলো।

  1. যে কোন ধরণের Text লেখা যায়।
  2. Text লিখতে গিয়ে যদি বানানে কোন ভুল হয় তবে সংশোধনের সুযোগ পাওয়া যায়।
  3. প্রয়োজন অনুযায়ী Text -এ আলাদা আলাদা কালার দেওয়া যায়।
  4. ভবিষ্যতের জন্য ডকুমেন্ট Save করা যায়।
  5. ডমকুমেন্ট Save করার পরও ডকুমেন্টকে নতুন করে শতভাগ সম্পাদনা করা যায়।
  6. ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে ওয়ার্ড প্রসেসরে তৈরি ডকুমেন্ট আদান-প্রদান করা যায়।
  7. একই সাথে একাধিক ডকুমেন্ট নিয়ে কাজ করা যায়।
  8. ডকুমেন্টের Text-এ ছবি , গ্রাফ , টেবিল , চার্ট ইত্যাদি সংযােজন করে ডকুমেন্টকে নান্দনিক ভাবে ফুটিকে তোলা যায়।
  9. কাগজের নথি বা ফাইলের পরিবর্তে Word processor এর মাধ্যমে ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করা সহজ।
  10. ডকুমেন্টকে Print Out করা যায়।

এগুলো ছাড়াও ওয়ার্ড প্রসেসরের আরো বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে। যা আপনি ব্যবহারের মাধ্যমে বুঝতে পারবেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ওয়ার্ড প্রসেসর এর গুরুত্ব

ডিজিটাল এই যুগে সব কিছুই কম্পিউটার নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। আমাদের চারপাশে প্রযুক্তির তৈরি বিভিন্ন জিনিসের সমাহার। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে চলে এসেছে সহজলভ্যতা। কিন্তু ওয়ার্ড প্রসেসর কিভাবে কাজ করে?

Word processor এমনই একটি প্রযুক্তি, যা আমাদের নিত্যদিনের কাজকে অনেক বেশী গতিময় করে দিয়েছে।

মানুষ এক সময় কাগজের বিভিন্ন নথি বা ফাইলের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ করত, এতে সময় ও অর্থের অপচয় বেশী হতো।

কিন্তু ওয়ার্ড প্রসেসর সফটওয়্যারের ব্যবহার যখন থেকে শুরু হলো, তখন থেকেই মানুুষ তথ্য সংরক্ষণের প্রাচীন প্রথা বাদ দিয়ে Word processor এর গুরুত্ব বুঝতে পারে।

এতে করে অফিস -আদালত, বাণিজ্যিক কোম্পানি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ মানুষের জীবনের প্রায় প্রতিটি কাজে সহজলভ্যতা এসেছে।

প্রযুক্তির উন্নয়নের ধারাবাহিকতা চলমান থাকলে ওয়ার্ড প্রসেসরের ব্যবহার এবং চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের যুগে Word processor কে আমাদের প্রায় প্রত্যেক মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গীই বলা যায়। এজন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ওয়ার্ড প্রসেসরের গুরুত্ব অপরসীম।

ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করে নতুন ফাইল খোলা

পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়ার্ড প্রসেসরের নাম হলো মাইক্রোসফট অফিস। এটিকে MS Word বলা হয়। আমি আপনাকে মাইক্রোসফট অফিস নামক ওয়ার্ড প্রসেসর ওপেন করার নিয়ম বলে দিচ্ছি।

এজন্য আপনার একটি কম্পিউটার অথবা মোবাইলের প্রয়োজন হবে। কম্পিউটার থাকলে গুগল থেকে MS Word সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে হবে, আর মোবাইল থাকলে গুগল প্লে-স্টোর থেকে MS Word অ্যাপসটি  মোবাইলে ইনিস্টল করতে হবে।

ইনিস্টল করার পর MS Word এর লোগোতে ক্লিক করুন। তাহলেই MS Word ওপেন হবে।

ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করে নতুন ফাইল খোলা
ওয়ার্ড প্রসেসর কি বাংলা

ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করে নতুন ফাইল খোলার নিয়ম হলো, আপনার MS Word ওপেন হওয়ার পর উপরের Menu Bar থেকে File বাটনে ক্লিক করুন। তারপর New থেকে Blank Document-এ ক্লিক করুন।

তাহলেই নতুন একটি Document পেজ ওপেন হবে। এবার এই Word processor মাধ্যমে আপনি Text লিখতে পারবেন। অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন ওয়ার্ড প্রসেসর চালু হওয়াকে কি বলে?

যে কোন ধরণের ওয়ার্ড প্রসেসর সফটওয়্যার চালু করে নতুন ডকুমেন্ট তৈরি করা হয়। তাই Word processor চালু করাকে  New Document (নতুন ডকুমেন্ট) বলা হবে।

ওয়ার্ড প্রসেসরে একটি ফাইল save করার পদ্ধতি

ওয়ার্ড প্রসেসরে কাজ করার পর সেই ডকুমেন্টকে সংরক্ষণ বা Save করার জন্য আপনার MS Word এর Menu Bar থেকে File বাটনে ক্লিক করুন।

তারপর Save As বাটনে ক্লিক করে সংরক্ষণের জায়গা নির্ধারণ করুন এবং ডকুমেন্টটির একটি নাম দিয়ে Save -এ ক্লিক করুন। তাহলেই আপনার ডকুমেন্টটি কম্পিউটার অথবা মোবাইলে Save হয়ে যাবে।

পরবর্তীতে এই ডকুমেন্টটি এডিট বা সম্পাদনা করার করার জন্য ডকুমেন্টটিকে ক্লিক করবেন তাহলেই ডকুমেন্টটি আপনার MS Word সফটওয়্যারে ওপেন হবে।

তারপর পুনরায় সেই ডকুমেন্টকে  Save করতে হলে MS Word এর Menu Bar থেকে File- এ যান এবং Save বাটনে ক্লিক করুন। তাহলেই আপনার ডকুমেন্টটি আপডেট হয়ে যাবে।

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক, ওয়ার্ড প্রসেসর কি এবং ওয়ার্ড প্রসেসরের সুবিধা কতটি এ নিয়ে সরল আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তাছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ওয়ার্ড প্রসেসর এর গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্যের কথাও উল্লেখ করেছি।

আপনি যদি একজন টেক লাভার বা শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তবে আশাকরি ওয়ার্ড প্রসেসর এর বৈশিষ্ট্য গুলো জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন।

Word processor নিয়ে যদি আপনার কোন প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই কমেন্টে বলবেন। আমি উত্তর দিতে চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। সবাই ভালো থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.