ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার সেরা উপায়

ঘরে বসে মোবাইলে আয়

ঘরে বসে অনলাইনে থেকে আয় করা যায়, এই বাক্যের সাথে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতো সুযোগ নেই। অনলাইন থেকে ইনকাম করার জন্য সাধারণত কম্পিউটার ব্যবহার করতে হয়। তবে আজ আমরা এমন কিছু বিষয় শেয়ার করবো, যা দ্বারা ঘরে বসে মোবাইলে আয় করতে পারবেন।

সারা বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম হওয়ায় এদেশের শিক্ষিত সমাজের অনেকেই এখন ঘরে বসে আয় করছেন। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ফ্রিল্যান্সিং বা ইন্টারনেট থেকে আয় করার বিষয়টা বেশ সাড়া ফেলেছে।

দীর্ঘদিন ধরে যারা বাংলাদেশ থেকে মোবাইলে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায় খুঁজতে ছিলেন, তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি বেশ ফলদায়ক হবে বলে মনে করি।

ঘরে বসে মোবাইলে আয়

ইন্টারনেটে থেকে আয় করা যায় এটা শতভাগ সত্য। তবে নতুন অবস্থায় আপনি যখন অনলাইন থেকে আয় করতে যাবেন, তার আগ মূহুর্তে আপনাকে বেশ কিছু বিষয় জেনে রাখা জরুরি। যেহেতু আপনি মোবাইলে আয় করতে চাচ্ছেন।

ইন্টারনেট ইউজারদের প্রায় সকলেরই মোবাইল ফোন আছে। সেই অনুযায়ী সকলের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ নেই। মোবাইল ইউজারদেরকে টার্গেট করে স্ক্যামাররা অনলাইনে বিভিন্ন ফাঁদ বা জাল বিছিয়ে রেখেছে।

পড়ার সাজেশনঃ
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ কি কি?
সেরা ০ টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট

মনে রাখবেন, অনলাইন ইনকাম এর অধিকাংশ কাজ কম্পিউটার বা ল্যাপটপ দিয়ে সম্পাদন করতে হয়। তবে অনেক কাজ আছে যা মোবাইলেও করা যায়।

অনলাইনে যেই টাকা ইনকাম করার অ্যাপ বা ওয়েবসাইট রয়েছে তার সবগুলোই জেনুইন বা রিয়েল না। অনেক ওয়েবসাট বা অ্যাপস আছে যারা কাজ করিয়ে টাকা দেয় না।

এজন্য আপনাকে শুরু থেকেই সতর্কতার সাথে কাজ করতে হবে। যেনো ঘরে বসে মোবাইলে আয় করতে গিয়ে আপনি প্রতারিত না হন।

মোবাইলে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়

ঘরে বসে মোবাইল দিয়ে আয় করার জন্য শতভাগ ট্রস্ট্রেড এবং যারা সত্যিই কাজ শেষে পেমেন্ট করে, সেই সমস্ত টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট এবং টাকা ইনকাম করার অ্যাপ নিচে তুলে ধরা হলো।

Blogging – ব্লগিং

একটি স্মার্টফোন দিয়ে অনলাইন থেকে ঘরে বসে ইনকাম করার সবচেয়ে লাভজনক ও কার্যকর পদ্ধতি হলো ব্লগিং।

Blogging করে বাংলাদেশ থেকেই হাজার হাজার মানুষ ঘরে বসে আয় করছেন।

আমি নিজেও Blogging কে আমার ফুল টাইম জব হিসেবে নিয়েছি। যদিও আমি অনলাইন থেকে ইনকাম করার জন্য অন্য কাজও করি। তবে Blogging হলো আমার প্রাথমিক ইনকাম সোর্স।

আমার ব্লগিং অভিজ্ঞতা প্রায় ৮ বছরের। আইটি নির্মাণ.কম ছাড়াও আমার আরো ব্লগ ওয়েবসাইট আছে।

আমার ব্লগিং এর শুরুটা হয়েছিল একটি মোবাইল ফোন দিয়েই। ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার অভিজ্ঞতা আমার নিজেরই রয়েছে।

আপনি যদি মোবাইল দিয়ে আয় করতে চান, তবে Blogging কে বেছে নিতে পারেন।

ব্লগিং শুরু করার জন্য আপনাকে একটি পার্সোনাল ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে হবে। বাজেট থাকলে টপ লেভেল ডোমেইন ক্রয় করে ব্লগ সাইট তৈরি করবেন।

পড়ার সাজেশনঃ
স্টুডেন্ট অনলাইন ইনকাম করার সেরা ৫ উপায়
ফেসবুকে কিভাবে টাকা আয় করা যায়?

আর নাহয় গুগল এর Blogger. com থেকে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করে নেবেন। Blogger. com এর একটি সুবিধা হলো তাদের থেকে ব্লগ সাইট খোলার জন্য আপনাকে ডোমেইন ও হোস্টিং কিনতে হবে না।

আপনার কোন প্রকার টাকা খরচ ছাড়াই Blogger. com এর মাধ্যমে ব্লগ সাইট তৈরি এবং ব্লগিং করে এডসেন্স থেকে আয় করতে পারবেন।

মজার বিষয় হলো যে কোন ধরণের ব্লগ সাইট মোবাইল দিয়েই কন্ট্রোল করতে পারবেন। এজন্য ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার জন্য Blogging হতে পারে টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়।

Content Writing – কন্টেন্ট রাইটিং

কন্টেন্ট রাইটিং যেহেতু লেখালেখির কাজ, যেহেতু এই কাজটি আপনি সম্পূর্ণ ভাবে মোবাইল দিয়েই করতে পারবেন।

চাহিদার দিক দিয়ে Content Writing বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার শীর্ষে। আপনার যদি লেখালেখির স্কিল ভালো থাকে, তবে Content Writing কে আপনার ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে পারেন।

Content Writing করার জন্য বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে। তারমধ্যে যেমনঃ

  • Upwork .com(আপওয়ার্ক)
  • Fiverr.com (ফাইবার)
  • Freelancer.com ( ফ্রিল্যান্সার)
  • contentwritingjobs.com ( কন্টেন্ট রাইটিং জব)

এই সাইটগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন উপায়ে কন্টেন্ট রাইটিং করে আয় করতে পারবেন।

ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার জন্য Content Writing যথেষ্ট মোবাইল ফ্রেন্ডলি জব।

Content Writing job টি করার জন্য আপনাকে ইংলিশ ভালো জানতে হবে।

ইংলিশ ছাড়াও অন্যান্য ভাষায় Content Writing করা যায়। তবে ইংরেজি ভাষাই Content Writing এর জন্য সবচেয়ে ভালো।

Fiverr ফাইবার ও Freelancer ফ্রিল্যান্সার

Fiverr.com এবং Freelancer.com এগুলো মূলত প্রফেশনাল মানের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। এই দুটি সাইটে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ আদান-প্রদান করে।

এই সাইট গুলোতে বড় কাজের পাশাপাশি ছোট কাজও রয়েছে। যা মোবাইল দিয়ে করা যাবে।

Fiverr.com এবং Freelancer.com থেকে আয় করাটা পুরোপুরি ফ্রিল্যান্সিং জব। কাজ শেষে শতভাগ নিশ্চিত ভাবে পেমেন্ট করা হয়।

পড়ার সাজেশনঃ
অনলাইনে ইনকাম বাংলাদেশী সাইট
ফ্রিল্যান্সিং কি হালাল নাকি হারাম?

তবে আপনারা যেহেতু এই সাইটগুলোতে মোবাইলে কাজ করে আয় করতে চাচ্ছেন, সেহেতু কাজের ক্যাটাগরিগুলোও খুব বেশী বড় না।

Fiverr.com এবং Freelancer.com সাইট থেকে ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার জন্য যেই টাইপের কাজ পাবেন তা হলোঃ Content Writing, Social media management, Article rewriting ইত্যাদি।

তবে আপনি যদি মোবাইল দিয়ে ছবি এডিটিং, লোগো ডিজাইন বা গ্রাফিক্স রিলেটেড কোন কাজ করতে পারেন, তবে Fiverr.com এবং Freelancer.com এর মাধ্যমে এই ধরণের কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

YouTube – ইউটিউব

ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার জন্য ইউটিউব খুবই জনপ্রিয়। ইউটিউব অ্যাপস আমাদের প্রায় সকলের মোবাইলেই ইনিস্টল আছে।

টাকা ইনকাম করার অ্যাপ হিসেবেও ইউটিউব অ্যাপস কে তালিকায় রাখা যায়।

ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য একটি স্মার্টফোনই যথেষ্ট ইউজার ফ্রেন্ডলি ফিচার প্রোভাইড করে।

ইউটিউব থেকে আয় করার নিয়মটা হলো আপনাকে একটি জিমেইল একাউন্টের মাধ্যমে YouTube চ্যানেল খুলতে হবে। তারপর সেই চ্যানেলে আপনার তৈরিকৃত ভিডিও আপলোড করতে হবে।

তারপর ২ মাসে ইউটিউবে দেওয়া ভিডিওগুলো থেকে ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম এবং হাজার সাবস্ক্রাইব আসতে হবে।

ইউটিউব থেকে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকাম শুরু করার জন্য এই টার্গেটটি পূরণ করা সবার জন্যই বাধ্যতামূলত। এটি পূরণ হবার পর এডসেন্সে এপ্লাই করতে পারবেন।

তবে ইউটিউব থেকে ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার জন্য এডসেন্স ছাড়াও আরো কিছু পদ্ধতি রয়েছে।

আমি ইতোমধ্যেই ইউটিউব থেকে আয় করার নিয়ম গুলো নিয়ে আর্টিকেল লিখেছি। পড়ে নিনঃ ইউটিউব থেকে আয়

গুরুত্বপূর্ণ কারো কিছু কথাঃ

ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার জন্য ইন্টারনেটে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং মোবাইল অ্যাপস পাবেন। প্রায় সবগুলোতেই লেখা দেখবেন টাকা ইনকাম করার ওয়েবসাইট / টাকা ইনকাম করার অ্যাপ।

এই টাইটেল গুলো দেখেই সেই সমস্ত সাইট বা অ্যাপসে কাজ শুরু করে দেওয়া ঠিক হবে না। আপনাকে যাচাই পূর্বক অনলাইনে কাজ করতে হবে।

পড়ার সাজেশনঃ
লেখালেখি করে আয় করার নিয়ম
কিভাবে ব্লগিং শুরু করবো?

আমি ২০৩ সাল থেকে অনলাইনে কাজ শুরু করেছি। আমার শুরুটা মোবাইল দিয়েই হিয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে আমি ক্রিপ্টুকারেন্সি বিটকয়েন নিয়ে কাজ করি। তখন বিটকয়েন কি আসলে তা জানতাম না। শুধু জানি এটা দিয়ে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা যায়।

তাছাড়া, ক্যাপটা টাইপের অনেক কাজ করেছি। এভাবে ২ বছর সময় অযথা নষ্ট করেছি। বিভিন্নভাবে প্রতারিত হয়েছি। এরপর অনেক কিছুই শেখা হয়েছে। আর শিখতে শিখতেই এই পর্যন্ত চলে আসা।

আপনি যদি ঘরে বসে মোবাইলে আয় করতে চান, তবে আমি যেই কাজ গুলোর কথা বলেছি, তাই করবেন। এর বাহিরে আসলে মোবাইলে আয় করার মতো খুব ভালো কোন পদ্ধতি নেই।

সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি ঘরে বসে আয় করতে চান, তবে কষ্ট করে একটি কমদামে পুরাতন কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ কিনে নিন। তবে অনলাইন ইনকামে আপনি মজা পাবেন।

যাইহোক, আমি জানি আপনারা পুরোপুরি নতুন। অনেকের কম্পিউটার বা ল্যাপটপ কেনার এই মূহুর্তে বাজেট নেই। যাদের স্মার্টফোন আছে তারা স্মার্টফোন দিয়েই শুরু করতে পারেন।

ঘরে বসে মোবাইলে আয় করার বিষয়ে আপনার যদি আরো কোন প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করুন। আমি সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করবো ইনশাআল্লাহ।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

2 comments

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.