মাইক্রোসফট উইন্ডোজ (Windows) কি? এর সুবিধা, বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ

মাইক্রোসফট উইন্ডোজ (Windows) কি? এর সুবিধা, বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ

কম্পিউটার প্রযুক্তির অগ্রগতির পেছনে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের অবদান অনস্বীকার্য। উইন্ডোজের জন্যই কম্পিউটার নির্ভর ইন্টারনেট প্রযুক্তি অতি অল্প সময়েই অনেক দূর এগিয়ে গেছে। কিন্ত Windows কি? উইন্ডোজ কিভাবে কাজ করে? আর এর সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্যইবা কি?

আপনি যদি একজন প্রযুক্তিপ্রেমী হয়ে থাকেন এবং কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনের সাথে সম্পৃক্ত থাকেন তবে আপনি কোনোনা কোনো ভাবে Microsoft Windows এর সেবা গ্রহণ করছেন। তাই একজন ইউজার হিসেবে Windows সম্পর্কে জানা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আজ আমি আপনাকে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয়াদি বলব। নতুন হলে আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনার জ্ঞানের ভান্ডার সমৃদ্ধ হবে এটা সুনিশ্চিত।

চলুন “উইন্ডোজ আপারেটিং সিস্টেম (Windows Operating System)” এর আদ্যোপান্ত জেনে নেওয়া যাক।

মাইক্রোসফট উইন্ডোজ কি?

Window অর্থ হলো জানালা। অর্থাৎ, কম্পিউটার অথবা স্মার্টফোনের স্ক্রিনের চারপাশের বর্ডার সীমানার মাঝখানে যেই এ্যাপ্লিকেশন বা ডকুমেন্ট গুলো ওপেন হয় তাকেই Window বলা হয়।

একটি ডিভাইসের স্ক্রিনে একাধিক উইন্ডোকে একসাথে ব্যবহারের সুবিধা পাওয়ার জন্যে মাইক্রোসফট এটিতে Windows নামে নামকরণ করেছেন। ।

Windows হলো Microsoft Corporation কর্তৃক তৈরি এবং পরিবেশিত একটি শক্তিশালী Graphical Interface Operating System.

এই Operating System -এর অধীনে বিভিন্ন ধরণের এপ্লিকেশন Software থাকে, যেই সফটওয়্যার গুলোকে পরিচালনার জন্য ”উইন্ডোজ আপারেটিং সিস্টেমটি” পরিচালক হিসেবে কাজ করে।

Operating System শুধুমাত্র Software কেই নিয়ন্ত্রণ করে না, বরং একটি ডিভাইস (device) এর যাবতীয় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব মূলত Operating System কেই নিতে হয়।

Windows এমনই একটি শক্তিশালী Operating System, যা Computer, Laptop, Tab এবং বিভিন্ন Smartphone -এ ব্যবহার করা হয়।

মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এতটাই সমৃদ্ধ যে, বর্তমানে উইন্ডোজ ভিত্তিক সফটওয়্যারের পরিমাণ গণনা করে শেষ করা যাবে না।

কম্পিউটারে করা যায় এমন প্রায় সব ধরণের সফটওয়্যার Windows Operating System -এর জন্য Available.

এজন্য যে কোনো কম্পিউটার ব্যবহারকারীকে উইন্ডোজের এই ব্যাপক সমৃদ্ধতা বার বার আকৃষ্ট করে।

আর এ কারণেই সারা বিশ্বে Computer Operating System এর জন্য Windows OS এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে।

Microsoft Windows -এর ইতিহাস

Windows Operating System টি মাইক্রোসফট কর্পোরেশন দ্বারা তৈরি একটি শক্তিশালী এবং আধুনিক গ্রাফিক্যাল অপারেটিং সিস্টেম।

উইন্ডোজ প্রকাশের আগে Microsoft এর ব্যবহারকারীরা একটি একক টাস্ক কমান্ড লাইন Operating System ব্যবহার করত।

কম্পিউটার আবিস্কারের পর ৯৬০-এর মধ্যভাগ থেকে শুরু করে ৯৮০ সাল পর্যন্ত Command-line Interface অধিকাংশ কম্পিউটার সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

কমান্ড-লাইন ইন্টারফেস মূলত শেলের সাথে ইমপ্লিমেন্ট করা হয়, যেটা টেক্সট হিসেবে কমান্ড গ্রহণ করে এবং কমান্ডকে তার উপযুক্ত Operating System ফাংশনে রূপান্তরিত করে দেয়।

১৯৮ সালে Microsoft কোম্পানি Disk Operating System (MS-DOS) নামে নতুন একটি অপারেটিং সিস্টেম প্রকাশ করে।

তারপর উক্ত অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবহারকারীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রেক্ষিতে ৯৮৫ সালের নভেম্বর মাসে Microsoft Corporation তার MS-DOS (ডিস্ক অপারেটিং সিস্টেম) এর বাড়তি সুবিধা হিসেবে Windows বাজারে আনে।

এর পর থেকেই মাইক্রোসফট উইন্ডোজের ব্যবহার সাধারণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

উইন্ডোজ প্রকাশের আগের অপারেটিং সিস্টেমগুলো খুব বেশী ইউজার ফ্রেন্ডলি ছিল না। তাছাড়া, উইন্ডোজের ব্যাপক জনপ্রিয়তার কাছে Microsoft Corporation নিজেরাই হয়ত অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ে গিয়েছিলেন।

যে কারণে Microsoft Disk Operating System (MS-DOS) ৯৮ সালে প্রকাশ করার পর ৮ টি সংস্করণ করেই ২০০০ সালে এই সিস্টেমের উন্নতি এক বারেই বন্ধ করে দিয়েছেন।

বর্তমানে কম্পিউটারের প্রায় সকল সাধারণ ব্যবহারকারীই Command-line Interface বাদ দিয়ে Graphical user interface ব্যবহার করছে। তাই উইন্ডোজের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এটাই মূলত উইন্ডোজের ইতিহাস।

উইন্ডোজ কত প্রকার ও কি কি?

1985 সালে Windows -এর প্রথম সংস্করণটি পর থেকে আজ পর্যন্ত 27 টি সংস্করণ রয়েছে। Windows Operating System -এর সর্বশেষ সংস্করণ হলো Windows 11 এবং এটি 2021 সালের 5 অক্টোবর প্রথম রিলিজ হয়।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারাবিশ্বে বর্তমানে .৪ বিলিয়ন মানুুষ ২০০ টিরও বেশী দেশে Windows Operating System ব্যবহার করছে। অর্থাৎ, বিশ্ব বাজারে যা প্রায় তিন-চতুর্থাংশ দখল করে রেখেছে।

চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এর প্রকারভেদ সম্পর্কে।

Windows 1.0

উইন্ডোজ 1.0 এটি ছিল উইন্ডোজের প্রথম ভার্সন। যা 1985 সালে Microsoft এর প্রতিষ্ঠাতা Bill Gates তৈরি করে ছিলেন। এজন্যই বিল গেটসকে উইন্ডোজের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।

মাইক্রোসফট এর প্রথম 16 বিটের গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস অপারেটিং সিস্টেম ছিল এটিই। এই সিস্টেমটিতে Calendar, Calculator, MS Point এর মতো বিভিন্ন ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহার করা হতো।

এই Operating System টি মূলত Microsoft Disk Operating System (MS-DOS) এর উপর চলছিল, যা Command-line Interface এর উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল।

Windows 2.0

উইন্ডোজের দ্বিতীয় সংস্করণের Version ছিল 2.0, এটি 1987 সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। Windows 2.0 সংস্করণটি Windows 1.0 থেকে কিছুটা উন্নত ছিল।

এই উইন্ডোজটি 286 Processor কে সাপোর্ট করত এবং এটি Video Graphics Array (VGA) Display তে আউটপুর্ট প্রদান করতো।

উইন্ডোজ 2 এর Resolution ছিল 640×480 Pixels এবং এটি সর্বোচ্চ 16 টি Color -এ কাজ করতে পারতো।

তাছাড়া, উইন্ডোজ 2 এর মধ্যে নতুন কিছু Tools যুক্ত করা হয়েছি। তারমধ্যে যেমন, Excel, Word, PageMaker এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য CorelDraw এর মতো বিভিন্ন Tools.

মাইক্রোসফট উইন্ডোজের 2.0 Version -এ Windows screen কে minimized  এবং maximized করা যেতো। যা আগের কোনো উইন্ডোজেই এটি সম্ভব ছিল না।

আবার 2.0 তে উইন্ডোজের একটি কন্ট্রোল প্যানেল ছিল যা দিয়ে উইন্ডোজের সেটিং এবং কনফিগারেশন নিয়ন্ত্রণ করা যেতো।

Windows 3.0

1990 সালে মাইক্রোসফট Windows 3.0 Version নে উইন্ডোজের নতুন সংস্করণ প্রকাশ করে এবং এটি আগের উইন্ডোজ গুলোর তুলনায় অনেক ফিচার সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী ছিল।

এই উইন্ডোজে GUI Update করার পাশাপাশি এটিতে নতুন নতুন icon যুক্ত করা হয়েছিল। এটিই প্রথম মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, যেই উইন্ডোজে  Hard Drive এর প্রয়োজন হয়।

এই উইন্ডোজে আলাদা Virtual memory, improved graphics এবং multitasking ফিচার সমৃদ্ধ হওয়ায় 1990 সালে থেকে 2001 সাল পর্যন্ত এর আনুমানিক 10 মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়।

Windows 3.0 এর একটি প্রধান সুবিধা ছিল SDK, অর্থাৎ উইন্ডোজ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট। এই ফিচারটি মূলত উইন্ডোজে Application তৈরির জন্য Developer দের জন্য একটি বিশেষ Platform সরবারহ করে।

Windows 3.0 ভার্সনটি তৈরি করার মাধ্যমে মাইক্রোসফট এতটাই সফল হয়েছিল যে, 1990 সাল থেকে 2001 পর্যন্ত Windows 3.0 Version টিই বাজারে চলছিল।

Windows 3.1

Windows 3.1 প্রথম প্রকাশিত হয় 1992 সালে। এই উইন্ডোজটিও আগের উইন্ডোজ গুলো থেকে কিছুটা ফিচার সমৃদ্ধ ছিল।

এটিই প্রথম উইন্ডোজ যেটি চালানোর জন্য 1 MB র‌্যাম (RAM) এর প্রয়োজন হয় এবং এই উইন্ডোজটিই প্রথমবারের মতো মাউজের সাহায্যে Disk Operating System (MS-DOS) প্রোগাম সাপোর্ট করে।

Windows 3.1 -এ মাধ্যমে Font Functionality কে অনেক গুরুত্বের সাথে মেইনটেনেন্স করা হয়।

Windows 3.1 কম্পিউটারে Install করার পর এটি কেবলমাত্র 10 MB থেকে 15 MB জায়গা দখল করত।

উইন্ডোজ 3.1 এর বড় একটি সুবিধা হলো, এটিতে Multimedia সাপোর্ট করতো, যেখানে External musical instruments এবং MIDI Device গুলোতে connect করা যেতো।

এই উইন্ডোজটিতে Ctrl+ Alt + Del চেপে কম্পিউটারে Open থাকা Application গুলোকে বন্ধ করার ক্ষমতা যুক্ত করা হয়েছিল।

Windows 95

Windows 95 প্রথম প্রকাশিত হয় 1995 সালের আগষ্ট মাসে। এই উইন্ডোজটি আগের সকল উইন্ডোজের থেকে অনেক ভিন্ন। অনেকেই বলে তৎক্ষালীন সময়ে এই উইন্ডোজ নাকি উইন্ডোজের ধারণাকেই পাল্টে দিয়েছিল।

Windows 95 এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো Start Menu এবং Start Button যুক্ত করা হয় এবং এটি Multitasking এর ফোকস করে তৈরি করা হয়।

এই উইন্ডোজটি 32 bit Application Support করতো। এই উইন্ডোজ থেকেই Application এর bit  নির্ণয় করা হয়েছিল এবং এই bit অনুযায়ী নতুন নতুন Application তৈরি করা হতো।

Windows 95 Operating System প্রথমবারের মতো বড় বড় এ্যাপ্লিকেশন সাপোর্ট করে।

Windows 98

Windows 98 প্রথম রিলিজ হয় 1998 সালে। সাল অনুযায়ীই এই উইন্ডোজের নামকরণ করা হয়।

Windows 98 কে DVD এবং USB -এর মাধ্যমে অনেকটা আধুনিক করা হয়। এতে উইন্ডোজের ব্যাপক উন্নতি ঘটে।

তাছাড়া, USB Hub, USB Mouse ব্যবহারের মাধ্যমে ইউজাররা অনেক বেশী আনন্দ লাভ করে।

Windows 98 -এর মাধ্যমে Back এবং Forward navigation button যুক্ত করা হয়েছিল।

Windows 2000

2000 সালের 17 ফেব্রুযারিতে Windows 2000 প্রথম রিলিজ হয়।

এই উইন্ডোজটি মূলত Microsoft এর Business ভিত্তিক সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল।

Windows 2000 ব্যবহার করে একাধিত External Device একসাথে Plug and play করা যেতো।

পরবর্তীতে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ২০০০ এর আলাদা আলাদা ৪টি ভার্সন নিয়ে আসা হয়।

বিভিন্ন সোর্স থেকে জানা যায়, Windows 2000 কে পরবর্তীতে Windows XP তে রূপান্তরিত করা হয় ।

Microsoft Windows ME

2000 সালের 14 সেপ্টেম্বর Microsoft Windows ME প্রথম প্রকাশিত হয়।

Windows millennium edition (ME) সর্বশেষ Operating System যা MS-DOS Kernel ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল।

এই উইন্ডোজটি Digital Media কে ফোকাস করে তৈরি করা হয়।  ফলে IEE 5.5 Windows Media Player 7 এবং Windows মুভি মেকার অ্যাপটিকেশন এই উইন্ডোজের প্রথমবারের মতো দেখা যায়।

Microsoft Windows ME তে প্রথমবারের মতো সিস্টেম Recovery বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয়।

তাছাড়া, এই উইন্ডোজে ‍ System File Protection বৈশিষ্ট্য যুক্ত করে দেওয়া হয়, যেনো অনাকাঙ্খিত কারণে উইন্ডোজ ফাইল নষ্ট হয়ে না যায়। আর নষ্ট হলেও যেনো Recovery করা যায়।

Windows XP

2001 সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হওয়া Windows XP Operating System টি তৎক্ষালীন সময়ে অত্যন্ত User-friendly OS হিসেবে প্রচুর স্বীকৃতি পায়।

Computer এবং Laptop ব্যবহারকারীরা Windows XP ব্যবহার করে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এটাই ছিল তখনকার সবচেয়ে আপডেট ও শক্তিশালী উইন্ডোজ।

Windows XP বেশ কিছু চমৎকার ফিচারে সমৃদ্ধ ছিল। তারমধ্যে যেমন, Start menu, taskbar এ বিভিন্ন Shadow, Visual effects সহ Green start button এবং Blue কালারের taskbar ইত্যাদি।

Windows XP এর সর্বশেষ আডটে আসে 2014 সালের এপ্রিল পর্যন্ত। এর পর মাইক্রোসফট উইন্ডোজটির আপডেট সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ঘোষণা করে।

Windows Vista

Windows XP প্রকাশের দীর্ঘ পাঁচ বছর পর অর্থাৎ 30 জানুয়ারি 2007 সালে Windows Vista অপারেটিং সিস্টেমটি প্রথম বাজারে আনা হয়।

এই উইন্ডোজের সিকিউরিটি সিস্টেমকে উন্নত করার প্রতি বেশ মনোযোগ দেওয়া হয়েছিল।

Data সুরক্ষার জন্যে এতে BitLocker driver Encryption ফিচার ব্যবহার করা হয়।

তবে Windows Vista খুব বেশী ইউজার ফ্রেন্ডলি ছিল না। তাছাড়া, এই উইন্ডোজে অনেক বাগ ছিল, যে কারণে Windows Vista মাত্র ৩ বছর সক্রিয় ছিল।

Windows Vista তে Microsoft DirectX 10 টেকনোলজিক্যাল ফিচার যুক্ত থাকায় কম্পিউটার Gamer রা এই উইন্ডোজে গেম খেলতে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছে।

Windows Vista তে DVD Maker এবং Photo Gallery অন্তরভূক্ত করা হয়। তাছাড়া, Windows Media Player 11 এবং অ্যন্টি-স্পাইওয়্যার প্রোগাম যুক্ত করা হয়েছিল।

Windows 7

Microsoft Windows 7 প্রথম Release হয় 2009 সালের অক্টোবর মাসে। এটি আগের সকল উইন্ডোজ থেকেই অনেক Fast এবং আরো Stable এবং ইউজার ফ্রেন্ডলিও বটে।

উইন্ডোজ ৭ তৎক্ষালীন সময়ে ব্যবসায়িক কাজে অনেক বেশী ব্যবহার হতো। তাছাড়া পার্সোনাল কাজেও এটি যথেষ্ট ব্যবহার হয়েছে। এখনো হয়।

উইন্ডোজ 7 প্রকাশের পর এটি খুবই দ্রুতই ব্যবহারকারীদের মন জয় করে নিতে সক্ষম হয়। যে কারণে ইতোপূর্বে যারা Windows XP ব্যবহার করত তাদের অধিকাংশ ব্যবহারকারীই Windows 7 -এ চলে আসে।

মজার বিষয় হলো, Windows XP অপারেটিং সিস্টেমের অধিকাংশ ব্যবহারকরীরা Windows Vista তে মুভ না করে সরাসরি Windows 7 -এ মুভ করে। কারণ, তখনও Windows Vista তেমন জনপ্রিয় হয়নি।

তাছাড়া, Windows 7 ছিল আগের উইন্ডোজ গুলোর তুলনায় নতুন নতুন ফিচারে সমৃদ্ধ। যেমন, স্ন্যেপ, পিক, এবং শেক ইত্যাদি। আবার, Windows 7 হলো খুবই ফাস্ট, সমৃদ্ধ এবং সিম্পল টাইপের OS.

এজন্য Windows XP এর পর সবচেয়ে জনপ্রিয় মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে Windows 7 সর্বমহলে স্বীকৃতি পায়।

Windows 8

2012 সালের অক্টোবর মাসের Windows 8 প্রথম প্রকাশিত হয়। এই উইন্ডোজ প্রকাশের পর ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন একটি অনুভূতি সৃষ্টি হয়।

কেননা, উইন্ডোজ ৮ আগের সকল Windows থেকে ভিন্ন ফিচারে Stable ছিল। এর Start Menu এবং Start button সম্পূর্ণ আলাদা ডিজাইনে রূপান্তরিত করা হয়। এটা ব্যবহারকারীদের মনে নতুন অনুভূতির জন্ম দেয়।

তাছাড়া Windows 7 থেকেও Windows 8 আরো Faster এবং এটিতে USB 3.0 Device সাপোর্ট করে।

উইন্ডোজ ৮ এর মাধ্যমে Windows Store ফিচার সর্বপ্রথম যুক্ত করা হয়, যা সর্বজনীন ভাবে Windows Applications সরবারহ করে।

তাছাড়া, Windows 8 এর মাধ্যমে Cloud computing এবং UEFI Firmware এর মতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল।

এগুলো ছাড়াও, Malware Filtering, Spam Detection এবং Built-in Antivirus Capability ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য যুক্ত করার মাধ্যমে উইন্ডোজ ৮ কে অনেক শক্তিশালী করা হয়েছিল।

Windows 10

2015 সালের 29 জুলাই উইন্ডোজ 10 প্রথম প্রকাশিত হয়। Windows 10 এতটাই Stable যে, অন্যান্য সকল ‍উইন্ডোজ থেকেই এটি অনেক বেশী ফিচার সমৃদ্ধ এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারাবিশ্বে বর্তমানে .৪ বিলিয়ন মানুুষ ২০০ টিরও বেশী দেশে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ Operating System ব্যবহার করছে। এরই মধ্যে শুধু Windows 10 এর ব্যবহারকারীই এক বিলিয়নেরও বেশী।

Windows 10 এ রয়েছে আধুনিক সকল সুযোগ -সুবিধা এবং এটি যে কোনো কাজের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

এই উইন্ডোজে অনেকগুলো আকর্ষনীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যারমধ্যে, সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো এর পার্ফরমেন্স। সফটওয়্যারের কাজ অথবা গেমিং, সবকিছুতেই এর পার্ফরমেন্স অনেক ভালো।

তাছাড়া, Windows 10 এর আরেকটি আকর্ষণের জায়গা হলো, কম্পিউটার, ল্যাপটপ ছাড়াও এটি স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।

Windows 11

এযাবৎকালের সবচেয়ে আলোচিত উইন্ডোজের নাম Windows 11. এটি 2021 সালের ৫ অক্টোবরে প্রথম প্রকাশিত হয়।

বর্তমানের সবচেয়ে ফিচার বেশী সমৃদ্ধ এবং Stable উইন্ডোজ এটিই। এটিই Microsoft এর Current উইন্ডোজ।

উইন্ডোজ 11 অপারেটিং সিস্টেমটি ইতোমধ্যেই গ্রাহকদের সাঝে তুমুল সাড়া ফেলেছে। উইন্ডোজ ০ থেকেও উইন্ডোজ ১১ আরোও সুন্দর।

Windows 11 তে শুধুমাত্র নতুন নতুন ফিচারই দেওয়া হয়নি। বরং উইন্ডোজ 10 কে কপি করে আগের সকল ফিচারগুলোকে আরো অনেক বেশী আকর্ষনীয় করে তোলা হয়েছে।

বিশেষ করে লেআউট গুলোর রাউন্ডেড কর্নার, নতুন উইজেট এবং মাল্টি-টাস্কিংসহ প্রায় সকল ক্ষেত্রেই পরিবর্তন এসেছে। আবার উইন্ডোজ 11 এর Start বাটনের আইকন গুলো বাইডিফল্ড মাঝখানে থাকবে।

উইন্ডোজ 11 এর সুবিধার মধ্যে রয়েছে দৃষ্টিনান্দন গ্রাফিক্যাল পরিবর্তন, উন্নত মানের টাস্ক ভিউ, ট্যাবলেট মোড এবং ইনস্ট্যান্ট সার্চ এন্ড গেমিং।

তাছাড়া, স্টার্ট মেনুর নতুন ডিজাইন, স্নেপ লেআউট, আবহাওয়া বার্তা, ট্রেন্ডিং নিউজ, ভিডিও কল, ভিডিও কনফারেন্স ইত্যাদি। তাছাড়া এন্ড্রোয়েড অ্যাপগুলো নেটিভলি উইন্ডোজ 11 -এ রান হবে।

উইন্ডোজ 11 -এ যেহেতু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গ্রাফিক্যাল পরিবর্তন এসেছে, সেহেতু এই অপারেটিং সিস্টেমটি ব্যবহার করার জন্য অনেক ভালো মানের কম্পিউটার প্রয়োজন হবে।

মাইক্রোসফট উইন্ডোজ কোনটা সবচেয়ে ভালো?

মাইক্রোসফটের প্রত্যেকটা উইন্ডোজই এক সময় রাজত্ব করেছে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই রাজত্বের পালাবদলও হয়েছে।

এমন কিছু উইন্ডোজ রয়েছে, যেগুলো অনেক পুরোনো হলেও ইউজারা এখনো তা ব্যবহার করে। তারমধ্যে রয়েছে, Windows XP, Windows 7, Windows 8, Windows 10 এবং Windows 11.

বর্তমানে Windows XP এবং Windows 8 এর তুলনায় Windows 7 বেশী ব্যবহার করা হয়। আবার Windows 7 এর চেয়েও বেশী ব্যবহার করা হয় Windows 10.

এই প্রেক্ষিতে বলতে গেলে আপনি Windows 7 অথা Windows 10 ব্যবহার করবেন। তবে আপনি যদি Windows Operating System এর আকর্ষনীয় ফিচারগুলো উপভোগ করতে চান তবে Windows 10 আপনার জন্য খুবই সুবিধা দেবে।

আবার আপনার কম্পিউটার যদি খুবই ভালো হয় এবং Windows কে আরো আকর্ষণের সাথে ব্যবহার করতে চান তবে Windows 11 আপনার জন্য মাইক্রোসফটের সেরা উপহার।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথাঃ

প্রিয় পাঠক, মাইক্রোসফট উইন্ডোজ কি এবং এর সুবিধা, বৈশিষ্ট্য ও প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন, তবে নিশ্চয় Windows সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারনা পেয়েছেন।

আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় উইন্ডোজ বলতে কি বুঝ? উইন্ডোজ কত সালে প্রথম প্রকাশিত হয়? মাইক্রোসফট উইন্ডোজ লেটেস্ট রিলিজ কোনটি? আশাকরি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজ থেকেই বিস্তারিতভাবে বলতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

যাইহোক, Windows সম্পর্কে যদি আপনাদের আরো কোনো প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই বলবেন। আর আর্টিকেলটি যদি আপনাদের কাছে উপকারী মনে হয় তবে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবে না।

আর্টিকেলটি পড়ে আপনার অনুভূতি কি, কমেন্টে নিজের মতো করে লিখে ফেলুন। সবাইকেই ধন্যবাদ

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.