অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়?

অনলাইন ভিত্তিক অর্থ উপার্জনের চমৎকার একটি মাধ্যম হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষ Affiliate Marketing এর সাথে সম্পৃক্ত থেকে তাদের জীবিকা অর্জন এবং পেসিভ ইনকামের পথ তৈরি করে নিয়েছে। আমাদের দেশের অগণিত মানুষ আছে, যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে কাজ করছে। তাদের মাঝে  আমিও একজন। আপনিও চাইলে সম্ভাবনাময় এই সেক্টরে কাজ করতে পারেন।

নতুনদের মাঝে অনেকেই আছেন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করতে চান, কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিষয়ে তেমন নলেজ না থাকায় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। আবার অনেকেই কাজ শুরু করার পর কিছূ করতে না পেরে হতাশায় পড়ে যান। আমি আজ সেইসব বন্ধুদের জন্যই আমার অভিজ্ঞতা থেকে কিছু বিষয় শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করছি নতুনদের জন্য খুবই ফলপ্রসূ হবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেটাকে বর্তমান সময়ে ভালো একটি চাকরির সাথে তুলনা করা যায়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ঘরে বসেই অনলাইন থেকে হিউজ পরিমাণ টাকা ইনকাম করা যায়। এখন প্রায় সব দেশেই অগণিত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার আছে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করে দেওয়া। পাশাপাশি প্রোডাক্টের বিক্রিত অংশ থেকে কমিশন গ্রহণ করা। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, মনে করেন আপনি কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করে দিলেন, তার বিনিময়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে কিছু টাকা আপনাকে দিলো। এটাই মূল অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকের প্রধান কাজ।

পৃথিবীব্যাপীই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর গুরুত্ব রয়েছে। কিছুদিন আগেও ইন্টারনেটে এর তেমন বিস্তার ছিল না। প্রায় কোম্পানিই তাদের প্রচার ও প্রোডাক্টের সেল বৃদ্ধি করার জন্য মাইকিং, রেডিও ও টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিতো। এতে কোম্পানিগুলোর অনেক অর্থ খরচ করতে হতো। তবুও অনেক সময় কোম্পানির টার্গেট পূরণ করা কঠিন হয়ে যেতো।

কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রচারের জন্য তেমন কষ্ট করতে হয় না। অ্যাফিলিয়েট প্রোগামের সাহায্যে সামান্য অর্থ খরচ করেই খুব সহজেই যে কোনো কোম্পানির টার্গেট পূরণ করা পসিবল। এজন্যই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব ও চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। আশা করা যায় এর চাহিদা আরো বৃদ্ধি পেতেই থাকবে। এটি সাধারণ মানুষের জন্য খুবই সম্ভাবনাময় পেশার হাতছানি!

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়?

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার বেশকিছু পদ্ধতি রয়েছে। তারমাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো নিজস্ব ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউব চ্যানেল। আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল থাকে তবে আপনি খুব সহজেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। যদিও এখানে কিছু রোলস্ ফলো করতে হবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য নিজস্ব ওয়েবসাইট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া  ওয়েবসাইট ব্যবহার করাতে বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। যা ইউটিউব চ্যানেল বা সোশ্যাল মিডিয়াতে পাওয়া যায় না।

ওয়েবসাইটের সুবিধা হলো, যে কোনো অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট সম্পর্কে সবসময় ক্রেতাদেরকে আপডেট তথ্য দেওয়া যায়। অর্থাৎ, কোম্পানির সব ধরণের প্রোডাক্টেরই দাম সবসময় এক থাকে না। দামের মাঝে কম-বেশী হয়। তাছাড়া, প্রায় সময় দেখা যায় বিভিন্ন দিবসে কোম্পানিগুলো তাদের নির্দিষ্ট কিছু প্রোডাক্ট সেল বৃদ্ধির জন্য ক্রেতাদেরকে বিশেষ ছাড়ে অফার করে।

এখানে ওয়েবসাইটের সুবিধা হলো, অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্টের জন্য যেই আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে, তাতে যে কোনো সময় নতুন তথ্য যোগ বা পুরাতন কোনো তথ্য ছাটাই করা যায়। যেটা ইউটিউব চ্যানেলের কোনো ভিডিওতে করা যায় না। এজন্যই বেশীরভাগ মানুষ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের কাজে ওয়েবসাইট ব্যবহার করে থাকে।

আপনি যদি কোন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে যান, দেখবেন এখানেও অনেক বাঁধা বা তাদের নিজস্ব নিয়ম ফলো করতে হবে। তবে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেও বিভিন্ন মার্কেটার হাজার হাজার ডলার ইনকাম করছে।

তবে হ্যাঁ, আপনি যদি প্রফেশনাল ভাবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান, তবে আমার বিশেষ পরামর্শ হলো নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট রাখুন। তারপর আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে মার্কেটিং করতে পারেন। এতে আপনার বেশ কিছু বাড়তি ফায়দা রয়েছে। যেমনঃ কোনো কোম্পানির প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার পাশাপাশি আপনার নিজের এবং আপনার  ওয়েবসাইটের পরিচিতও বৃদ্ধি হলো। তাছাড়া নিজস্ব ওয়েবসাইট দিয়ে মার্কেটিং করার কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে আপনার সম্পর্কে একটি সুধারণা তৈরি হবে। এভাবে আপনার পথচলা আরো সহজ হয়ে যাবে।

অনেক মানুষ আছেন, যারা আপনার থেকে প্রোডাক্ট কেনার আগে আপনার সম্পর্কে জানতে চাইবে। এটা স্বাভাবিক। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো আপনার যদি নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকে, তবে অব্যশই ইতোমধ্যেই আপনার এবং আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে সবার জানা হয়ে যাবে। ফলে সাধারণ ক্রেতারা আপনার থেকে প্রোডাক্ট ক্রয় করতে দ্বীধা করবে না। সত্যি কথা বলতে আপনাকে এমন ভাবে কাজ করতে হবে, যেনো আপনাকে সবাই চিনে এবং বিশ্বাস করে। অচেনা মানুষের কাছ থেকে কেউ কিছু কিনতে চায় না।

তাই নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ শুরু করুন। একটি ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার প্রধান চয়েজ। এটা আপনাকে নতুনত্ব এনে দেবে। শুধু তাই নয়; আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে সবার কাছে একটু বাড়তি ভ্যালু পাবেন।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা

আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে চান তবে অবশ্যই আপনার জন্য একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিন। তারপর আস্তে আস্তে করে মানুষের কাছে বিশ্বস্ততা অর্জন করুন। এটা আপনাকে সব ক্ষেত্রেই সাপোর্ট দেবে। কেউ যদি আপনাকে না চিনে, তবে আপনার কাছ থেকে কেউ প্রোডাক্ট ক্রয় করতে চাইবে না। আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকেই বিষয়টা শেয়ার করলাম। আশাকরি সবাই উপকৃত হবেন। এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা মতামত কমেন্টে জানান।

👉 পোষ্টটি পড়ে উপকৃত হলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.