ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায়

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায়

মুক্তপেশা নামে খ্যাত বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আধুনিক পেশা হলো ফ্রিল্যান্সিং। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশেই ফ্রিল্যান্সিং সম্ভাবনা প্রবল। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ভিত্তিক এই পেশায় যুক্ত হয়ে লক্ষ লক্ষ পরিবার ক্যারিয়ার জীবনে সফলতা অর্জন করেছে। নতুন হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায় গুলো কি কি তা অবশ্যই আমাদের জেনে নেওয়া উচিত।

ফ্রিল্যান্সিং এ বাংলাদেশের অবস্থান হলো দ্বিতীয় এবং প্রথম স্থানে রয়েছে ভারত। এই দুটি দেশের রেমিট্যান্স খাতে প্রচুর পরিমাণ অর্থ ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আসে। যা দেশের ডিজিপি সমৃদ্ধি করণেও বিশেষ ভুমিকা রাখে।

ফ্রিল্যান্সিং এর এই অপার সম্ভাবনায় অনুপ্রাণীত হয়েছে লক্ষ লক্ষ তরুণ -তরুণী। ইতোমধ্যে অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং করে খুবই অসাধারণ ক্যারিয়ার গড়ার সৌভাগ্য অর্জন করে নিয়েছে এবং অনেকেই নতুন করে শুরু করতে চাচ্ছে।

আমিও একজন ফ্রিল্যান্সার। ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এই কাজের সাথে জড়িয়ে আছি। এই দীর্ঘ পথ চলায় অনেকেই জানতে চেয়েছেন ফ্রিল্যান্সিংয়ে কি কি কাজ করা যায় এবং সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায় কি?

আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ সম্পর্কে কিছু সহজ ধারণা দেবো, যা ফলো করলে আপনি অত্যন্ত দ্রুত সময়েই ফ্রিল্যান্সিংয়ে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হবেন ইনশাআল্লাহ।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সঠিক স্কিল নির্বাচনের গুরুত্ব

ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে প্রাথমিক ভাবে সঠিক স্কিল নির্বাচনের গুরুত্ব অপরসীম। আপনার যদি সঠিক স্কিল না থাকে তবে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে আপনি খুব বেশি উন্নতি করতে পারবেন না।

আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, যারা সঠিক স্কিল ডেভেলপ না করে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেছিল তাদের অনেকেই মাঝপথে এসে থেমে গেছে। আবার যারা সঠিক স্কিল অর্জন করে ধৈর্যের সাথে কাজ চালিয়ে গেছে, তাদের প্রায় সকলেই সফলতা অর্জন করে নিয়েছে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সহজে সফল হতে সঠিক স্কিলের বিকল্প নেই। শুরুতেই সঠিক স্কিল নির্বাচন করা অনেকের জন্যই কঠিন। তবে এটা অসম্ভব কিছু নয়। আপনি যদি সঠিক স্কিল ডেভেলপ করে ফ্রিল্যান্সিং যাত্রা শুরু করেন, তবে অল্প সময়েই ভালো ফলাফল পাবেন।

মনে রাখতে হবে, ফ্রিল্যান্সিং মুক্তপেশা নামে খ্যাত হলেও এখানে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে হয়। নতুন অবস্থায় দেখবেন যে, আপনার সঠিক স্কিল থাকা সত্বেও ক্লাইন্ট বা কাজ পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে প্রায় সকল ফ্রিল্যন্সারকেই যেতে হয়।

কাজ না পাওয়ার কারণে আমি আমার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকবার স্কিল পরিবর্তন করেছি। প্রথম ৩ বছরে নিজের পকেট খরচও অনলাইন থেকে আয় করতে পারিনি। তবুও ধারাবহিকতা ঠিক রেখেছি। এটাই মূলত ধৈর্যের পরীক্ষা।

তবে শুরু থেকেই সঠিক স্কিল থাকলে এতটা সময় অযথা নষ্ট হতো না।  ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হওয়ার উপায় গুলোর মধ্যে উপযুক্ত স্কিল অপরিহার্য। তাই চলুন ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে উপযুক্ত স্কিল গুলো কি কি তা জেনে নিই।

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ার সেরা ৮ টি স্কিল

অনলাইন এবং অফলাইনের কাজের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ, অফলাইনে এমন অনেক কাজ আছে, যার চাহিদা অনলাইনে কম। আবার অনলাইনে অনেক কাজ আছে, যার চাহিদা অফলাইনে একবারেই নাই।

তাই ফ্রিল্যান্সিং এ সহজেই সফলতার জন্য আপনাকে এমন কাজ নির্ণয় করতে হবে, যেই কাজের চাহিদা অনলাইনে রয়েছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে এমনই কিছু স্কিল আইডিয়া নিচে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

, কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট

কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অত্যন্ত স্মার্ট একটি স্কিল। এই স্কিলের উপর লক্ষ লক্ষ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করছে। তবে এই স্কিল অর্জন করা সবার জন্য সহজ নয়।

কারণ, কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এমনই একটি কাজ, যেটা শেখার জন্য আপনাকে উন্নত মানের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং নলেজ আয়ত্ব করতে হবে।

কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট মূলত কম্পিউটার কেন্দ্রিক সফটওয়্যার তৈরির কাজ। এটা শেখার জন্য উচ্চতর গণিত এবং সায়েন্স বিষয়ক পড়াশোনা করতে হয়।

পৃথিবীব্যাপী অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলে।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও অনেক আইটি ফার্ম আছে, যেখানে কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট শেখানো হয়। তবে আপনি যেভাবেই শিখেননা কেন, প্রোগ্রামিং সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়ার জন্য উচ্চতর গণিত এবং সায়েন্স বিষয়ে আপনাকে দক্ষতা অর্জন করতেই হবে।

কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট অনেক উচ্চ মানের কাজ। ফ্রিল্যান্সিংয়ে এই কাজের অনেক চাহিদা রয়েছে।

২, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট

আমরা সকলেই জানি, স্মার্টফোনের জন্য বেশ কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেম হলো এন্ড্রয়েড ( Android) এবং আইওএস (IOS)।

Android হলো পৃথিবীর বৃহত্তম স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেম। যেটা গুগল কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হয়। IOS হলো দ্বিতীয় বৃহত্তম স্মার্টফোন অপারেটিং, যেটা অ্যাপল কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হয়।

এগুলো ছাড়াও আরো নতুন নতুন স্মার্টফোন কেন্দ্রিক অপারেটিং সিস্টেম তৈরি হচ্ছে। তবে আপনি যেই ধরণের অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ করেনা কেন, আপনাকে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বা কোডিং সম্পর্কে জ্ঞান আয়ত্ব করতে হবে।

মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য আপনাকে প্রায় কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এর দিক নির্দেশিকা ফলো করতে হবে। কারণ, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট যেই ধরণের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে করা হয়, ঠিক সেই ধরণের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়েই কম্পিউটার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট করা হয়।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট খুবই জনপ্রিয় এবং চাহিদাসম্পন্ন একটি স্কিল। আপনি এই স্কিলের উপর কাজ করে সহজেই সফলতা অর্জন করতে পারবেন।

৩, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট

ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট একই ক্যাটাগরির কাজ। তাই দুটোকে একসাথেই রাখছি। একটি স্মার্ট ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়ার জন্য ওয়েব ডিজাইন খুবই সম্ভাবনাময় একটি কর্ম।

ওয়েব ডিজাইন মূলত কোডিং ভিত্তিক কাজ। আর কোডিং এর কাজ মূলত গাণিতিক নির্দেশনা মেনে করতে হয়। তাই এই স্কিল অর্জন করার জন্যে নূন্মতম এসএসসি পাস হলে কাজ করতে অনেক সুবিধা হবে।

এই কর্মের সাথে সারাবিশ্বের অগণিত মানুষ জড়িয়ে আছে। ওয়েব ডিজাইনে ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে এই পেশাটিকে আপনি নিঃসন্দেহে বেছে নিতে পারেন।

৪, এসইও

এসইও (SEO) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে ‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইশেন’। এটা মূল ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এসইও করার মাধ্যমে একটি ওয়েব পেজ মূলত সার্চ ইঞ্জিনে Rank করে।

বর্তমানে অনলাইনে ডিজিটাল বণিজ্যের জোয়ার চলছে। তাই এসইওকে অনলাইন ভিত্তিক বাণিজ্যের প্রচারাভিযানের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

এসইও মূলত ওয়েবসাইট ভিত্তিক কাজ। এসইও শিখতে হলে আপনাকে কন্টেন্ট রাইটিং, বেসিক এইচটিএমএল, কন্টেন্ট মেটা এবং সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে জানতে হবে।

ফ্রিল্যান্সিং ছাড়াও অনলাইনে নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচারের জন্য এসইও অনেক উচ্চ মানের কাজ। ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারের জন্য এটি অত্যন্ত উপযোগী স্কিল।

আরও পড়ুনঃ SEO / এসইও শিখতে কতদিন লাগে?

৫, স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও চাহিদার ভিত্তিতে স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স ডিজাইন হলো অন্যতম। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রত্যেকটা কাজেই স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স প্রয়োজন হয়। বই-পুস্তক থেকে শুরু করে সব ধরণের আসবাব পত্রেও স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার মাধ্যমে যে কেউ চাইলে তার জন্য ফ্রিল্যান্সিং ভিত্তিক একটি দারুণ ক্যারিয়ার বিল্ড করতে পারে। স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার জন্য একাডেমিক বিশেষ কোনো সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই। আপনি কোন ব্যকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন তাও দেখবেনা কেউ।

তবে স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স শেখার জন্য আপনাকে কম্পিউটার এবং নকশা সম্পর্কে সু-ধারণা রাখা উচিত। ফ্রিল্যান্সিং এ এই কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশী। আবার এটিতে কম্পিটিশনও অনেক। তবে এই স্কিলের উপর ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়া সবচেয়ে সহজও বটে।

৬, মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইন

মোশন গ্রাফিক্স এর অপর নাম অ্যানিমেশন গ্রাফিক্স। এটিও খুবই জনপ্রিয় একটি স্কিল। এভাবে বলা যায় যে, মোশন গ্রাফিক্স হলো স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স এর আপডেট ভার্সন।

অনেকেই হয়ত মোশন গ্রাফিক্স এবং স্টিল ইমেজ গ্রাফিক্স এর পার্থক্য বুঝেন না। তারা জেনে নিন গ্রাফিক্স ডিজাইন কি ও কত প্রকার?

মোশন গ্রাফিক্সও খুবই সম্ভাবনাময় একটি কাজ। এটি শেখার জন্য আপনাকে উচ্চ মানের একাডেমিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে না। আপনি যে কোনো শ্রেণী-পেশার মানুষ হোননা কেন, মোশন গ্রাফিক্স স্কিলের উপর ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

৭, ভিডিও এডিটিং

বর্তমান সময়ে ভিডিও এডিটিং কম-বেশী সকল মানুষেরই প্রয়োজন হয়। অনলাইন এবং অফলাইনে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। একটি অনলাইন জরিপে দেখা গেছে, বেশীর ভাগ মানুষ অডিওর থেকে ভিডিও বিষয়ে আগ্রহী এবং এই আগ্রহের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।

ইউটিউব এর কথাই ভাবুন, মানুষ এখন ফেসবুক রেখে ইউটিউবের প্রতি খুবই আগ্রহ দেখাচ্ছে। কারণ, ভিডিও বার্তাগুলো কাউকে কষ্ট করে পড়তে হয়না। শুধু তাকিয়ে থাকলেই ভিডিও থেকে মেসেজ পাওয়া যায়। তবে ভিডিও বার্তাকে আকর্ষণীও করার জন্য দক্ষতার সাথে ভিডিও এডিটিং করাও জরুরি।

তাই দিন দিন দক্ষ ভিডিও এডিটরের চাহিদাও বাড়ছে। সামনের দিনগুলোতে ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য দক্ষ এডিটরের চাহিদা আরো বেড়েই চলবে। ফ্রিল্যান্সিংয়েও এই কাজের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

ভিডিও এডিটিং শেখার জন্য একাডেমিক তেমন পড়াশোনার প্রয়োজন নেই। শিখতেও তেমন কষ্ট হয় না। তাই ভিডিও এডিটিং হতে পারে আপনার জন্য সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায়।

৮, কন্টেন্ট রাইটিং

কন্টেন্ট রাইটিং মূলত লেখালেখির জনপ্রিয় একটি পেশা। এই পেশায় কোটি কোটি মানুুষ নিযুক্ত রয়েছে। এটি মূলত ডিজিটাল মার্কেটিংয়েরই একটি অংশ। কন্টেন্ট রাইটিং সবার জন্য নয়। যারা লিখতে জানে কেবল তাদের জন্যই এই পেশা।

বিভিন্ন বিষয়ের উপর কন্টেন্ট রাইটিং করে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে প্রযুর পরিমাণ অর্থ আয় করা যায়। আবার ব্লগিং-এ কন্টেন্ট রাইটিং করে পেসিভ ইনকামের মতও সোর্স তৈরি করা যায়।

ফ্রিল্যান্সিং এ কন্টেন্ট রাইটিং এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তবে আপনাকে অবশ্যই ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হতে হবে। কারণ, ইংরেজি ল্যাঙ্গুয়েজ ছাড়া কন্টেন্ট রাইটিংয়ে খুব ভালো ক্যারিয়ার সুবিধা এখন পর্যন্ত নেই। তবে সামনের দিনগুলো আসতে পারে।

উপরোল্লিখিত এই ৮টি স্কিল ফ্রিল্যান্সিংয়ে অনেক চাহিদাসম্পন্ন। আপনি যদি এই স্কিলগুলো উপর কাজ করতে পারেন, তবে সহজেই অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং ভিত্তিক ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন ইনাআল্লাহ।

সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন

সঠিক মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করা সহজেই ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হওয়ার উপায়। আপনার সঠিক স্কিল ডেভেলপ করার পর পরই যথাপোযুক্ত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস নির্ণয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুরুর দিকে এই কাজটি বেশীর ভাগ মানুষই করতে পারে না।

তবে আপনাকে অবশ্যই যথাপোযুক্ত মার্কেটপ্লেস নির্বাচন করে কাজ শুরু করা উচিত। আমি আপনাকে বেশ কয়েকটি মার্কেটপ্লেসের নাম বলে দিচ্ছি।

সেরা ১০ টি মার্কেটপ্লেস তালিকা

  • Upwork
  • Fiverr
  • Guru
  • Freelancer
  • People Per Hour
  • 99 designs
  • Toptal
  • PubLoft
  • Simply Hired
  • Aquent ইত্যাদি।

উপরোল্লিখিত মার্কেটপ্লেস গুলো শতভাগ ট্রাস্ট্রেড এবং ফ্রিল্যান্সিং করার উপযোগী। আপনারা অবশ্যই এই মার্কেটপ্লেস গুলোতে কাজ করবেন।

আমার শুরুটা হয়েছিল একটি ভুল সিদ্ধান্তের মধ্যদিয়ে। যার কারণে আমাকে অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল। প্রথমেই গ্রাফিক্স ডিজাইন স্কিলের উপর অদ্ভুত টাইপের একটি মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করি। যার নামটাও  এখন মনে নেই। তার অনেকদিন পর Freelancer.com -এ চলে আসি। তারপর Fiverr এ।

তবে বর্তমানে আমি কোনো মার্কেটপ্লেসে কাজ করিনা। নিজস্ব এজেন্সির মাধ্যমে সার্ভিস দিয়ে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করি। এটা আমাকে অনেকাংশে সুবিধা তৈরি করে দিয়েছে। মার্কেটপ্লেসের নানা সীমাবদ্ধতার কারণে একটি সময়ে ফ্রিল্যান্সারেরা নিজস্ব এজেন্সির মাধ্যমেই সার্ভিস দেয়।

এটি আপনার ক্ষেত্রেও হতে পারে। তবে ফ্রিল্যান্সিং এর শুরুটা অবশ্যই মার্কেটপ্লেস দিয়ে করাই উচিত। কেননা, নিজস্ব এজেন্সিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নতুনদের জন্য খুবই কঠিন হয়ে যাবে। তৈরি হতে পারে টিকে থাকার প্রশ্নও। তাই মার্কেটপ্লেস দিয়েই শুরু করুন।

ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হওয়ার উপায় নিয়ে আরো কিছু কথা

পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলব, আপনি যদি সহজেই ফ্রিল্যান্সিং এ সফল হতে চান, তবে একটি সহজ স্কিল নির্বাচন করুন। তবে অবশ্যই যেই স্কিলের উপর কাজের চাহিদা রয়েছে সেটিই নির্ণয় করতে হবে। তারপর সফলতার সাথে সাথে আস্তে আস্তে স্কিলের পরিমাণ বাড়াতে পারেন।

আমি আমার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে বেশ কিছু স্কিল ডেভেলপ করেছি। তারমধ্যে রয়েছে, গ্রাফিক্স ডিডাইন, ওয়েব ডিজাইন এবং ডিজিটাল মার্কেটিং (এসইও)। আমি এই সবগুলোর সমন্বয়ে কাজ করি। পাশাপাশি লেখালেখি ভালো লাগাতে ব্লগিংয়েও একটু সময় দেই।

তবে আমি মূলত গ্রাফিক্স ডিডাইন দিয়েই শুরু করেছিলাম। আপনিও তা দিয়ে শুরু করতে পারেন অথবা উপরোল্লিখিত স্কিল গুলো থেকে যে কোনোটা নির্বাচন করতে পারেন।

মনে রাখবেন, সঠিক স্কিল, উপযুক্ত মার্কেটপ্লেস এবং ধৈর্যযুক্ত সাধনা আপনাকে সফলতা এনে দেবে। আর এটাই কেবল সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায়। তাই প্রথমেই নিজস্ব স্কিলের প্রতি মনোযোগ দিন।

আশাকরি আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। এই বিষয়ে আপনার যদি আরও কোনো প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করুন।  সবাইকেই ধন্যবাদ।

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.