ফাইবার গিগ মার্কেটিং করার সেরা কৌশল সমূহ 2024

ফাইবার গিগ মার্কেটিং করার নিয়ম কানুন

ফ্রিল্যান্সিং জগতে ফাইবার খুবই জনপ্রিয় একটি নাম। বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সাররা ফাইবার মার্কেটপ্লেস দিয়েই ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করে। ফাইবারে কাজ করে সহজে সফলতা পাওয়ার জন্য ফাইবার গিগ মার্কেটিং করা খুবই জরুরি।

অনেকেই আছে দীর্ঘদিন ধরে ফাইবারে নতুন নতুন গিগ পাবলিশ করছে কিন্তু ক্লাইন্ট পাচ্ছেনা। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় সকল ফ্রিল্যান্সাররাই হতাশগ্রস্থ হয়ে পড়ে।

রাত-দিন কষ্ট করে কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন না করতে পারলে এই কষ্টের কোনো মানেই হয় না। ফাইবার মার্কেটপ্লেস এমন একটি জায়গা, যেখানে লক্ষ লক্ষ সেলারের কম্পিটিশন।

তবুও বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সাররা ফাইবার মার্কেটপ্লেসেই কাজ করতে পছন্দ করে। কারণ ফাইবারে প্রকাশিত গিগ গুলোর মার্কেটিং করতে পারলে খুব সহজেই কাজ পাওয়া সম্ভব।

আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং এ গ্রাফিক্স ডিজাইনের চাহিদা ও সম্ভাবনা

তবে অনেকেই আছে যারা ফাইভার গিগ মার্কেটিং করতে যেয়ে প্রোপারলি নলেজ না থাকায় বিভিন্ন ভুল করে ফেলে। আবার অনেকেই মার্কেটিং করেও তেমন সাফল্য পায় না।

আমার অভিজ্ঞতা থেকে এমন কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, যেগুলো আপনাকে ফাইবারে সহজেই কাজ পেতে সাহায্য করবে।

ফাইবার গিগ মার্কেটিং কি এবং কেন?

ফাইবার খুবই জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। এই মার্কেটপ্লেসে যেই কাজ গুলো সার্ভিস আকারে প্রকাশ করা হয় তাকেই গিগ করে। ফাইবারে একজন ফ্রিল্যান্সার মূলত গিগ এর মাধ্যমেই কাজ পায়।

যেই ফ্রিল্যান্সাদের গিগ গুলো যতবেশি রেংক করে, সেই ফ্রিল্যান্সার তত বেশিই কাজ করার সুযোগ পায়। তবে একথা সত্য যে, গিগ সহজেই রেংক করে না।

ফাইবার গাইডলাইনে এমন কিছু নীতিমালা রয়েছে,  গিগ তৈরিতে আপনাকে অবশ্যই সেই নীতিমালা ফলো করতেই হবে। ফাইবারে গিগ রেংক না করার খুবই কমন একটি কারণ হলো তাদের রুলস ফলো না করা।

আপনি ফাইবার গিগ মার্কেটিং করেন আর না করেন, প্রথমেই ফাইবারের গিগ পলিসি মেনে আপনার গিগ কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। কনটিটি প্রদর্শনে সকলেই ব্যস্ত, কিন্তু দিনশেষে সবাই কোয়ালিটির কাছে ফিরে আসে।

গিগ তৈরিতে এমন কোনো কাজ করা যাবে না, যেগুলো ফাইবার মার্কেটপ্লেস নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। যেমন ধরুন গিগের টাইটেল, ডেস্ক্রিপশন এবং ইমেজে অশ্লীল বাক্য বা অশ্লীল ছবি দেওয়া যাবে না।

আরো পড়ুনঃ ক্যারিয়ারে সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার উপায়

অনেক সময় এমন হয় যে, কোয়ালিটি গিগ গুলোতে এমন কোনো শব্দ, বাক্য বা ইমেজ ব্যবহার করা হয়েছে, যেগুলোকে ফাইবারের রুলসের বিপরীত। ফাইবার কখনই এই ধরণের গিগকে রেংক দেয় না।

এই ধরণের গিগের জন্য যতই মার্কেটিং করা হোকনা কেন, ফাইবার কখনই সেই গিগগুলোকে রেংক দেবে না, বরং সেই গিগ গুলো ডিলেট করে দেবে অথবা ডাফটে নিয়ে যাবে।

ফাইবার গিগ মার্কেটিং করার নিয়ম কানুন

ফাইভারের নিজস্ব এলগরিদম রয়েছে, তার ভিত্তিতেই মূলত গিগ র‌্যাংক করে থাকে। গুগল রেংকিং ফ্যাক্টরের মতই প্রায়।

ফাইভারের এলগরিদমে প্রধান কিছু রেংকিং ফ্যাক্টর রয়েছে যেগুলোর উপর নির্ভর করে আপনি আপনার গিগকে র‌্যাংকে আনতে সক্ষম হবেন।

গিগ এর মার্কেটিং করার আগে ফাইবার গিগ তৈরিতে কিছু বিষয় ফলো করা বাঞ্ছনীয়। নিচে সেগুলো উপস্থাপন করা হলো –

০১. কিওয়ার্ড রিসার্চ করা

অনলাইন মার্কেটিং এর যে কোনো সেক্টরে কিওয়ার্ড রিসার্চ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি ফাইবারে যেই বিষয়ের উপর গিগ তৈরির কথা ভাবছেন, সেই বিষয়ের সিড কিওয়ার্ডটি খুঁজে বের করুন।

সিড কিওয়ার্ড মানে হলো টার্গেটেড কিওয়ার্ড বা ফোকাস কিওয়ার্ড। মনে করুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর গিগ তৈরি করতে চাচ্ছেন। এক্ষেত্রে আপনার সিড কিওয়ার্ডটি হচ্ছে “Graphics Design”।

০২. সিড কিওয়ার্ডটি গিগ এর টাইটেলে রাখা

সিড কিওয়ার্ড দিয়ে একটি আকর্ষণীয় টাইটেল আপনার গিগকে সহজেই র‌্যাংকিংয়ে আনতে পারে।

ফাইবারে সিড কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করলে সিড কিওয়ার্ড সম্মিলিত অনেক চমৎকার চমৎকার টাইটেল খুঁজে পাবেন। অথবা আপনি নিজ থেকেই সিড কিওয়ার্ড দিয়ে ইউনিক কোনো টাইটেল তৈরি করবেন।

যেমন আপনার সিড কিওয়ার্ড “Graphics Design”। টাইটেলে এই কিওয়ার্ডটা রেখে একটা চমৎকার টাইটেল তৈরি করা যেতে পারে। উদাহরণঃ “I will do professional Graphics Design”

০৩. সিড কিওয়ার্ডটি গিগ এর ডেসক্রিপশনে রাখা

সিড কিওয়ার্ড দিয়ে গিগ এর টাইটেল তৈরির পর ডেসক্রিপশনেও সিড কিওয়ার্ডটি ব্যবহার করে গিগ সম্পর্কে বিস্তারিত বিষয় বর্ণনা করতে হবে।

ডেসক্রিপশনে সিড কিওয়ার্ডটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে লেখার সাথে যেনো ন্যাচারালি মিলে যায়। পুরো ডেসক্রিপশনে মেইন টার্গেটেড কিওয়ার্ডটি সর্বোচ্চ ২ বার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট।

তবে অবশ্যই রিলেটেড আরো ভিন্ন ভিন্ন কিওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। তবে একটি গিগ এর এসইওর ভিত্তি শক্তিশালী হয়।

০৪. গিগ এর ট্যাগ

ফাইবারে গিগ এর ট্যাগ গুলো গিগ রেংকিংয়ে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আপনি একটি গিগের জন্য ৫টি ট্যাগ ব্যবহারের সযোগ পাবেন।

এখানে অবশ্যই মনগড়া ট্যাগ ব্যবহার করা যাবে না। কিওয়ার্ড রিসার্চ করে এমন কিছু LSI কিওয়ার্ড বা রিলেটেড কিওয়ার্ড খুঁজে বের করুন যেই কিওয়ার্ড গুলো লিখে বায়ারটা ফাইবারে গিগ সার্চ করে।

০৫. গিগে পজেটিভ রিভিউ

একটি গিগে তখনই রিভিউ আসে বায়ার যখন সেই সার্ভিসটি ক্রয় করে। সার্ভিস দিতে গিয়ে বায়ারকে অবশ্যই সর্বোচ্চ কোয়ালিটি সার্ভিস দেওয়া উচিত। নাহয় গিগে নেগেটিভ রিভিউ আসবে।

একটি গিগে নেগেটিভ রিভিউ খুবই খারাপ। যা গিগের র‌্যাংক ডাউন করে দেয়। এজন্য বায়ার থেকে পজেটিভ রিভিউ পাওয়ার জন্য আপনার কোয়ালিটি সার্ভিস নিশ্চিত করুন।

০৬. সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার

ফাইবার গিগ মার্কেটিংয়ের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সোশ্যাল প্লাটফর্মে গিগ শেয়ার করলে আপনার গিগ যে শুধু র‌্যাংক করবে বিষয়টা এমন নয়, বরং সোশ্যাল প্লাটফর্ম থেকেও অনেক বায়ার পাবেন।

তবে সোশ্যাল প্লাটফর্মে গিগ শেয়ার আগে আপনাকে হাইলি রিকমেন্ট করবো গিগ এর কোয়ালিটি নিশ্চিত করুন। তাহলে সোশ্যাল প্লাটফর্ম থেকেই আপনার গিগে অনেক বায়ার রিকোয়েস্ট আনতে পারবেন।

সোশ্যাল প্লাটফর্ম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো লিংকডইন। কারণ, ফাইবারের গিগে লিংকডইন থেকে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

তবে অন্যান্য প্লাটফর্ম গুলোতেও অবশ্যই গিগ শেয়ার করবেন। যেমন, ফেসবুক, টুইটার, পিন্টারেস্ট ও গুগল প্লাস ইত্যাদি। তাছাড়া, ইমেইল মার্কেটিংও করতে পারেন।

শেষ কথাঃ

প্রিয় পাঠক, আপনি ফাইবার গিগ মার্কেটিং করার জন্য উপরোক্ত বিষয় গুলোকে যথাযথভাবে ফলো করতে পারেন, এতে আপনার ফাইবার মার্কেটপ্লেস এর মাধ্যমে খুবই চমৎকার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন।

সর্বোপরি ফাইভার এলগরিদম প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে। তবে উপরোক্ত বিষয় গুলো ফাইভার এলগরিদমে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এগুলোকে এড়িয়ে ফাইভাবে সাকসেস হওয়া প্রায় অসম্ভব।

যাইহোক, আশাকরি ফাইভার গিগ মার্কেটিং বিষয়ে আপনারা সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। এই ভিসয়ে যদি আপনার আরো কোনো প্রশ্ন থাকে তবে অবশ্যই কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ

IT Nirman

যত জ্ঞান-ধন করেছি অর্জন জীবনের প্রয়োজনে,
তার সবটুকুই বিলাতে চাই সৃষ্টির কল্যাণে।

Add comment

Your Header Sidebar area is currently empty. Hurry up and add some widgets.